বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন
মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, কলাপাড়া প্রতিনিধি:: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের বাইরে আরও রাজনৈতিক দল অংশ গ্রহন করেছেন। এ আসনে এবারে নির্বাচনের নতুনত্ব লক্ষ্য করা যায় দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার নৌকার প্রার্থীর মুল প্রতিদ্বন্দ্বী। এ আসনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মোঃ মহিববুর রহমান মহিব। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট যুদ্ধে লড়ছেন। এরা “দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী” হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন। তবে রাজনৈতিক নেতা- কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের টেলিভিশন টকশোতে এহেন কথা শুনা গেছে, “জনসমর্থন নিয়ে ভোট যুদ্ধে বিজয় অর্জন করে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। এ আসনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বদ্বিতা গড়ে তোলার সামর্থ্য রাখেন। তবে ভোটের এখনো ১৭ দিন বাকী। ১৮ ডিসেম্বর সোমবার জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতিক বরাদ্দ পেয়ে বিকেলে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। ভোট অনুষ্ঠানের দিন যত কাছাকাছি আসবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চিত্র আরো স্পষ্ট হবে।
পটুয়াখালী-৪ আসনটি কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী-মহিপুর থানাসহ দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনের ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ৩৪১ জন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার নৌকা প্রতিক নিয়ে ৯০ হাজার ৭ শ’ ৭৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। পরে ২০০৯ সালের ৩১ জুলাই তিনি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন।
এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। আলহাজ্ব মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার বারবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার সুযোগে এ জনপদে রাঙ্গাবালী উপজেলা, কুয়াকাটা পৌর সভা, ৪ টি নতুন ইউনিয়ন পরিষদ, পানি উন্নয়ন বিভাগ, সড়কও জনপথ অধিদপ্তরের সাব ডিভিশন, পর্যটন কেন্দ্রের আপগ্রেড, রাস্তার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এ উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌরসভার মধ্যে ৬ টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ছিল। বাকী ৮টি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রামনাবাদ মোহনায় দেশের তৃতীয় সামুদ্রিক বন্দর নির্মান কাজ প্রক্রিয়াধীন ছিল।পায়রা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ হয়েছে।
এছাড়া শেখ জামাল, শেখ কামাল, শেখ রাসেল, ফোরলেন সংযোগ ব্রিজ (টিয়াখালী-লোন্দা), কলাপাড়া-চাকামইয়া ব্রিজ, আন্ধারমানিক নদীর উপর ( টিয়াখালী- বালিয়াতলী) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর নির্মান প্রক্রিয়াধীন ছিল। তা ছাড়া ২০০১ সালে প্রথম নির্বাচিত হওয়ার পরে থেকে কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী ও মহিপুর থানায় ব্যাপক মেগা প্রকল্প রাস্তা ঘাট সুইজগেট কালভর্ট সহ যে উন্নয়ন তিনি করেছেন। সারা বাংলাদেশে যে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ হয়েছে গত ৫ বছরে যে সংস্যদ সদ্যস ছিলেন জাতীয় প্রকল্প ছাড়া কোন কাচাঁ রাস্ত, পাকা রাস্তা হয়নি বলতেই চলে। আলহাজ্ব মোঃ মাহবুবুর রহমান তালুকদার ১৯৫৪ সালের ১০ জানুয়ারী কলাপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জম্ম গ্রহন করেন। তার পিতা মরহুম একেএম ইসমাইল তালুকদার ছিলেন একজন তুখোর রাজনীতিবিদ।পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং রাজনৈতিক দীক্ষা নেন তার কাছেই। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন মাহাবুবুর রহমান।রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় তিনি তৈরী করে নেন তার অবস্থান। উঠে আসেন রাজনীতির উচ্চ শিখরে। একন জাতীয় রাজনীতিতে তার অনবদ্য বিচরন। কলাপাড়ায় দলীয় কর্মকান্ড সংগঠিত করেছেন।সাংগঠনিক ভিত রচনা করেছেন। মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদার ১৯৭২-৭৩ সালে থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৩-৭৪ সালপর্যন্ততিনি কলাপাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
২০০২ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব সাংগঠনিক দক্ষতার সঙ্গে পালন করেন। ২০০৩ সাল থেকে তিনি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাদের-চুন্নু এবং জালাল-জাহাঙ্গীর পরিষদের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রী ও এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেছেন। নিজেকে শুধু রক্তের নয়, রাজনৈতিকেরও যোগ্য উত্তরসুরি দাবী করে জনাব মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, তার পিতা মরহুম একেএম ইসমাইল তালুকদার কলাপাড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৯ সালে থানা আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। স্বাধীনতাকে লাভের পর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তার পিতা বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এবং কর্মী ছিলেন বলে জানান। এজন্যই জেলার আগে থানা আওয়ামী লীগের কমিটি প্রথম গঠন করা হয়েছিল। জীবনের বড় গর্ব এটাই। এজন্যই মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদার এ আসন থেকে তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তিনি নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে আশাবাদী। ২০১৮ সালে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মহিববুর রহমান মহিব। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে কোনা যোগাযোগ ও সখ্যতা না থাকায় এবার দলীয় নমিনেশন পেয়েও দলীয় নেতাকর্মীদের তার থেকে দূরাত্ব বলে জানাগেছে।